পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১

কুসংস্কার - মাথায় একবার ঠুয়া খেলে শিং গজায়

 খুব পরিচিত একটি কুসংস্কার যা ছোটবেলায় জানা -শোনা - “ দুজন মানুষের মাথায় একবার ঠুন বা ঠুয়া লাগলে বা বাড়ি লাগলে আরেকবার ঠুন দিতে হবে না হলে শিং গজাবে”।

এই কুসংস্কার স্কুলে দেখেছি সকলেই জানতো তার মানে এইটা প্রত্যেক ঘরে ঘরে ছোট বেলায় বলে বলে প্রত্যেকের মোমোরি সেলে স্থায়ী করে দেয়া হয়েছে।
এটা একটা অতি তুচ্ছ এবং মোটামুটি নির্দোষ কুসংস্কার।
নির্দোষ কারণ এইটা আসলে সমাজের তেমন দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটায় না। আর ‘মোটামুটি’ তিন কারণেঃ
১. মস্তিষ্ককে কুসংস্কার জিনিসটার প্রতি বিশ্বাস করার একটা প্রাকটিস করানো
২. মাথায় দ্বিতীয়বার বাড়ি দিতে গিয়ে জোড়ে আঘাত লাগতে পারে
৩. দ্বিতীয়বার ঠুনা না দিতে পারলে বা ভুলে গেলে একধরনের মানসিক যন্ত্রনায় ভুগতে হতে পারে ।
… আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি আমার এই লেখা যারা পড়ছেন তাদের কেউই বিশ্বাস করেন না মাথায় একবার ঠুয়া খেলে শিং গজায়।
( মানুষের মাথায় টিউমার জনিত কারণে ত্বকের মাইটোসিস অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে শিংয়ের মত আকার নিতে পারে তবে সেটা একটা রোগ তার সাথে ঠুয়া লাগার কোন সম্পর্ক নেই - ছবি)



… তারপরও ঘরে ঘরে এই কুসংস্কার শিশুদের শেখানো হয় ।
আমার প্রশ্ন এখানেই - মানুষ কেনো একটা অন্ধ বিশ্বাস অন্যকে সেখানোর জন্য বা প্রচার করার জন্য এত উঠেপড়ে লাগে, শিং গজানোর এইটা না হয় অতি তুচ্ছ বা কেউ বলবেন মজা করার বিষয় কিন্তু এমন এমন কুসংস্কার রয়েছে যার জন্য হাতাহাতি, মারামারি খুনোখুনি পর্যন্ত করে ফেলে মানুষ ।
কেউ কোন অপ্রমাণিত জিনিস অন্ধভাবে বিশ্বাস করলে করতেই পারে- কিন্তু তার প্রচার এবং অন্যকে মানাতেই হবে - এইটা কেনো?
গতকাল রাতে Dune(2021) মুভিটা দেখছিলাম । চমৎকার সব কল্পনা- গাঁজাখুড়িও বটে কিন্তু ওটা কিন্তু কাউকে বিশ্বাস করতে বলছে না- বলাই হচ্ছে ওটা ফিকশন- সায়েন্স ফিকশন। যে গ্রহে কোন গাছ জন্মায় না, পানি নেই কেবল বলি আর বালি সেখানো মানুষ অক্সিজেন পাচ্ছিলো কোথায় - কিন্তু ওটা ফিকশন - কল্পনা, কোন অন্ধবিশ্বাসের প্রচার নয়।
অন্যদিকে “ আই মেয়ে সন্ধ্যাবেলা ছাদে খোলা চুলে যাসনে, ভূতে ধরবে”
- নিজে বিশ্বাস করুন - “নো প্রোবলেম”, কিন্তু অন্যকে বলার আগে প্রমাণ দিন -ভূত কি, মেয়েদের লম্বা চুল দিয়ে ভূতের কাম কি?
আর যদি বলেন মেয়ে যাতে সন্ধ্যায় ছাদে গিয়ে পাশের বাড়িক মজনুর সাথে প্রেম করতে না পারে তাই এই পন্থা, তাহলে কিন্তু মেয়েটাও সেটা বোঝে এবং এই আক্রোশ ও মিথ্যাভয়ের ছাই চাপা মানসিকতা “ সিজোফ্রেনিক” বা কোন ভয়ানক মানসিক রোগ হয়ে বুমেরাং হতে পারে। তখন কিন্তু আবার বলবেন - দেখছো ঐ যে জ্বীন ভূতে ধরেছে🙄😜🤭
-আচ্ছা ছেলে যদি লম্বা চুল রেখে খোলা ছাদে সন্ধ্যাবেলায় যায় - পরী বা পেত্নি ….(?)
স্থানঃ ১৫০ নং বাস
ব্রীসবেন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন