পৃষ্ঠাসমূহ

বুধবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৮

যাচাই


স্নাতকের পদার্থ বিদ্যা ক্লাশ নিতে ঢুকলেন আমাদের প্রিয় আশিক স্যার। তিনি এই ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে জুনিয়র এবং সুদর্শন স্যার। কথাতেও তিনি মিষ্টভাষী। সুন্দর একটা হাসি দিয়ে বললেন, “এখন আমি আপনাদের একটি পরীক্ষার কথা বলবো। পরীক্ষার ঘটনাটি শুনে আপনাদের বলতে হবে, এই পরীক্ষাটির নাম কি? উত্তর দেয়র জন্য আপনারা যে কোন বই খুলতে পারবেন, মোবাইলে নেটে ঢুকে গুগলও করতে পারবেন, কিন্তু সময় মাত্র ১ মিনিট”। সবাই নড়ে চড়ে বসলাম। কনসেনট্রেশন এখন ঘরময় ভরপুর। সব চোখ স্যারে দিকে নিবিষ্ট।

স্যার শুরু করলেন, “এক সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক বিজ্ঞানী তার ল্যাবরেটরিতে পৌঁছালেন। মাথায় তার ঘুরছে একটি বিষয়। ল্যাবটরির এক কোণায় কাচে ঘেরা ঘরটিতে ঢুকে দরজা লক করে দিলেন। ঘরটিতে ”জিরো গ্রাভিটি” সৃষ্টির ব্যবস্থা আছে। তিনি জিরো গ্রাভিটি সৃষ্টি করলেন। তারপর তিনি হেঁটে হেঁটে কাচের ঘরের ভেতর অন্যপ্রান্তে রাখা টেবিলটার দিকে এগিয়ে গেলেন। টেবিলে তিনি আগে থেকে দুটো কাচের বিকারের একটিতে পানি এবং অণ্যটিতে সোডিয়াম ক্লোরাইড মানে খাবার লবণ রেখেছিলেন। দুটো বিকার দুহাতে নিয়ে উপরে তুলে ধরলেন এবং এক সাথে দুটো বিকার উপুর করে ধরলেন এবং তিনি দেখলেন পানি বা লবনের কোনটিই নিচে পড়লো না...এক মিনিট সময় এখন শুরু, পরীক্ষাটির নাম কী?”
... এক মিনিট শেষ, যার কাছে যা বই ছিলো সব উল্টে পাল্টে, যার যার মোবাইলে নেট চালু ছিলো, গুগল টুগল করেও কিছু পাওয়া গেলো না। আমিতো গুগলে কি ইংরেজী লিখে সার্চ দিবো সেটাই ঠিক করতে পারলাম না। কেউই আমরা উত্তর দিতে পারলাম না। স্যার তার সেই জগত ভোলানো হাসি দিয়ে বলে উঠলেন,  “পরীক্ষাটির নাম ‘ফারহাননাইট্রেট ও প্রিরাজুলাইজেশন’, থ্রি ইডিয়েট মুভি দেখেছেন কে কে?”
সবাই হাত তুললাম। স্যার আবার বলতে শুরু করলেন,‘মনে পড়ে ডিন ক্লাশে র‌্যাঞ্চর দাসকে পড়াতে বললো, র‌্যাঞ্চর দাস ঐ দুটি শব্দ লিখে ১ মিনিট সময় দিলো উত্তর জানার, কেউ পারলো না...”
আমরা ক্লাশের সকলেই বুঝতে পারলাম। আসলেই তো কতগুলো ভুল ঐ প্রশ্নে...জিরো গ্রাভিাটি ল্যাবের কাচের রুমে তৈরীই এক অসম্ভব, আর যদি তৈরীও করা হয়, সেখানে হেঁঠে হেঁটে হাতে ধরে বিকার উপরে উঠানো শূণ্য মধ্যাকর্ষণে কখনই সম্ভব নয়, অথচ সে সব চিন্তা না করেই, যাচাই না করেই আমরা খুঁজতে শুরু করেছি চোখ বোজা গাধার মত...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন