পৃষ্ঠাসমূহ

সোমবার, ২০ জুলাই, ২০২০

শিক্ষক

মাঝে মাঝে হঠাৎ হঠাৎ কতিপয়, শিক্ষক, গুরু, ওস্তাদকে মনে পড়ে যাদের একটা দুটো কথা হলেও মস্তিষ্কে একটা স্মরণ সরোবরে স্থায়ী স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে....হারিয়ে যাওয়া তেমন কাউকে মনে পড়ে ফেসবুকে খুঁজি ...কেমন আছেন? কোথায় তিনি?....যোগাযোগ রক্ষা বিষয়ে আমি বরাবরই একদম ট্যান্সড টু শুন্য...তবু খুঁজি..ফেসবুকের সহায়তায় খুঁজি, হয়তো অনেকে জগত ছেড়েছেন, হয়তো অনেকে বৃদ্ধ হয়েছেন...
.
জগৎ ছেড়েছেন স্কুলের আয়রণ লেডি বড় আপা , নটরডেমের মধুর বক্তা মোক্তার স্যার...
কোথায় আছেন স্কুলের সবচেয়ে বলিষ্ঠ এবং প্রিয় রউফ স্যার -জানি না, অংককে প্রকৃতভাবে ভালোবাসতে শেখানো শিশির স্যার আর জহরলাল স্যারের খোঁজ হয়তো কষ্ট করলে পাওয়া যাবে-কষ্ট করা হয় না...
মুন্না ভাই শিখিয়েছিলেন কিভাবে ইন্টারে পরীক্ষায় অংক মেলাতে হয়...ওনাকেও মনে পড়ে...
যে ম্যাডামটি স্কুলে অভিশাপ দিয়েছিলেন তাকেও মনে পড়ে...
আমার বাংলায় যিনি সাহিত্যপণা খুঁজে পেতেন সেই চন্দন আপা...কিংবা নেচার স্ট্যাডির সেই দৃঢ়চেতা মিজানুর রহমান স্যার -যিনি ভিন্ন ভিন্ন ডাইমেনশন শেখাতেন জীবনের তাঁর কথাও মনে পড়ে...
আইইউটিতে ফিজিক্স পড়াতেন বুয়েটের ফিরোজ স্যার ওনাকে মনে পড়ে
আবার নাম ভুলে গেছি এমন শিক্ষকের কথাও মনে পড়ে...
বুয়েটে মাস্টার্সে এক স্যার বোর্ড দাঁড় করিয়ে মনিটরি পলিসির উপর লেকচার দিতে বলেছিলেন ওনাকেও মনে পড়ে...টেলিকম স্টাফ কলেজের একজন সিনিয়র সরকারী অনিয়মের ফিরিস্তি শেখাতেন নাম ভুলে গেলেও তাকে মনে পড়ে...
পিএটিসিতে এক সিনিয়র সচীব বলেছিলেন - সারাজীবনে শুধু মাত্র একবার ১০০০ কোটি টাকার কোন প্রকল্পের ১% পকেটে ঢুকালে হয় ১০০ কোটি - নাম ভুলে গেলেও তাকে মনে পড়ে ....
আবার মনে পড়ে এক বছর বাঁশি শেখানো দুলাল ওস্তাদের কথা..কিংবা ২৬ বছর আগে মার্শাল আর্ট শেখানো আনুসুর রহমান নয়ন ওস্তাদের কথা...( আজ ২৬ বছর পরে ফেসবুকে নয়ন ওস্তাদেক পেয়েছি..ভালো লেগেছে দেখে উনি এখনো মার্শাল আর্ট শিখিয়েই  চলেছেন, দেখলাম জাতীয় কোচ রেফারি র পদ হতে অবসর নিয়েছেন) ....

গতকাল সাতক্ষীরা শ্যামনগর থানার নকীপুর পাইলট স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক-শেখ গিয়াসউদ্দিন,  আমার ছোট নানা ( আম্মার ছোট চাচা) বার্ধক্য সজনিত কারণে মারা গেছেন..ওনার কত কত ছাত্র -ছাত্রী...নিশ্চয় তারাও ওনাকে মনে করেন অনেকেই ....শিক্ষক হবার, যোগ্য শিক্ষক হবার এই এক লাভ....অমর হবার সুযোগ...
এই এলোমেলো আগোছালো জীবনে কয়েকমাস এক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেও শিক্ষকতা করেছিলাম...না আমাকে মনে রাখার মত কিছু আমি করি নি..আমি একটা চাকুরী করতে হয় তাই করছিলাম...
তবে সবচেয়ে বড় যে শিক্ষক আমার তাকে সবচেয়ে কাছ থেকে দেখলেও তাকে আর পাওয়া যাবে না কোথাও খুঁজে ...তিনি আমার বাবা ( তিনি নিজে জীবনের শুরুতে একটা অল্প সময় কলেজের শিক্ষক ছিলেন) ...তাঁকেও মনে পড়ে...কিছু আলোচনা...যুক্তি তর্ক বাকী ছিলো..বাকী ছিলো অনেক কিছুই শেখা .....

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন