পৃষ্ঠাসমূহ

বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৯

হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ূন আহমেদের একটি উপন্যাসের প্রথম লাইনটি পড়ার সাথে সাথে একটি অদৃশ্য কুয়াশার আবরণ আমাকে ঘিরে ধরতে শুরু করতো, দ্রুততর পাঠ এগিয়ে যেতে থাকতো আর পূর্ণ বৃত্ত হতে থাকতো আবরণ সেই, উপন্যাসের শেষ লাইন পাঠের আগেই কুয়াশার বৃত্তে হতাম বন্দি, পাঠ শেষে সেই বৃত্তে কিছুক্ষণ এক ভাবের অবগাহন হতো, এলোপাথাড়ি সমান্তরাল অসমান্তরাল দৃষ্টিপাত হতো, দৃষ্টিপাতের একটি তাপ থাকে
সে তাপে কুয়াশার বৃত্ত চুপষে যেতে থাকতো, পুরোটা চুপষে গেলেই আমি আবার খোলা আকাশের নিচে, রৌদ্র কিংবা আঁধারের সাথে মিলেমেশে যেতাম ; কিন্তু সেই অদৃশ্য কুয়াশার বৃত্তে শুয়ে বসে থাকা স্বল্প কাল বড় মধুর থাকতো, ভাবের মাতলামী অনু পরমাণু বারেবারে ছুঁয়ে যেতো আর অনেকবারই বইয়ের শুরুতে যেখানে হুমায়ূন আহমেদ বিশ্ব সাহিত্যের কোন উক্তি, চরণ কিংবা দেশীয় ধাঁধাঁ তুলে ধরতেন সেখানে কলমের খোঁচায় আমার দূর্বল কাব্য অ-গুণে কিছু লাইন কবিতা ভেবে লিখে দিতাম...
এমনটা অনেকবার করেছিলাম... ( হয়তো তার কিছু নমুনা এখনও ঢাকাতে বাসায় আছে)...
তাপর যখন লেখক হবার কাদা পানিতে আয়রণ করা ফতুয়া পাঞ্জাবী পড়ে নেমে পড়তে সাধ হলো, কিছু উরনচন্ডী গল্পটল্প ও উপন্যাসও লেখা হলো - মনে দূরাশা হতে থাকলো একদিন লেখক হবো , কোন একদিন হূমায়ূন স্যারের সাথে কথা হবে, তাঁর বইয়ের প্রথম পাতায় লেখা কোন একটি কবিতার মত অচরণ তার চরণে সমার্পন করবো, হুমায়ূন আহমেদও দ্রুত অসময়ে চলে গেলেন, আমিও একদিন টের পেলুম চোরা কাদায় কবে জানি পা আটকে গিয়েছিলো বলে সময় এগিয়ে গেছে আমি শুধু পরে আছি ... পা দুটো মুক্ত করতেই সকল শক্তি অপচয় হয়ে গেলো...

এখন আর উপন্যাস-গল্প পড়া হয় না, শোনা হয়, ইউটিউবে গল্প উপন্যাসের অডিও বেড়েই চলেছে , তবে তাতে সেই কুয়াশার বৃত্ত এসে ঘিরে ধরেনা সাময়িক সময়ের জন্য আর তার দরকারও নেই , কারণ এখন আমি নিয়মিত ইতিহাস পড়ি, দর্শন পড়ি আর বাস করি বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায়....

14/11/2019

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন